যে হাটে দিনে বিক্রি হয় প্রায় ৪ লাখ টাকার জলপাই—-
আজিজুর রহমান মুন্না—–
মুখরোচক সৌখিন খাবার আচার সারা বছর পাওয়া গেলেও আশ্বিন, কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই তিন মাসেই বাজারে দেখা মেলে টক স্বাদের মৌসুমি ফল জলপাইয়ের। আর এ সময়ই জমে উঠে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটিতে জলপাইয়ের হাট। প্রতিদিন প্রায় চার লাখ টাকার জলপাই কেনাবেচা হয় এই হাটে। জলপাই কেন্দ্রিক জেলার একমাত্র হাটটিতে আশ-পাশের কানগাঁতি, হরিণা বাগবাটি, ঘোড়াচরা, খাগা, সূবর্ণগাঁতি, ফুলকোচা ও বাক্ষ্রমবাগ গ্রাম থেকে জলপাই নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি বগুড়া, পাবনা ও ঢাকা’র পাইকারসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এখান থেকে জলপাই কিনে বিক্রি করেন রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়। জলপাই গাছের তেমন পরিচর্যা করতে হয় না, দিতে হয় না কোনো প্রকার কীটনাশক। তাই জলপাই চাষীরা সহজেই লাভের মুখ দেখতে পান। সেজন্য বাড়ছে জলপাইয়ের চাষ।
স্থানীয় জলপাই বিক্রি করতে আসা মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, বাগবাটিতে নিয়মিত হাট বসে সপ্তাহে দুইদিন- রোববার ও বৃহস্পতিবার। কিন্তু মৌসুমে প্রতিদিনই বসে জলপাইয়ের হাট। এ বছর বৃষ্টি বেশি হওয়ায় ফলন একটু কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
ব্যবসায়ী আজাহার আলী জানান, গাছে মুকুল আসার পরই মালিকদের গাছ থেকে তারা গাছ ক্রয় করেন। আকার ভেদে প্রতিটি গাছে ৮ থেকে ১৫ মণ পর্যন্ত জলপাই ধরে। পাইকারি দরে মণ প্রতি কেনা হয় ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা যা বিক্রয় হয় মণ প্রতি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকায়। প্রতিদিন এই হাটে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার জলপাই বেচাকেনা হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আনোয়ার সাদাত জানান, আশ্বিন, কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই তিন মাস জলপাইয়ের মৌসুম। নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ টক জাতীয় এই ফল সরাসরি এবং সিদ্ধ করে লবণ খাওয়া গেলেও আচার হিসেবেই বেশি জনপ্রিয়।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ফলটির উৎপাদন বাড়াতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এ বছর শুধুমাত্র সদর উপজেলাতেই ৫০ হেক্টর জমিতে জলপাইয়ের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১০ মেট্রিক টন।